কালবৈশাখীর পরে। নীলচে বিকেল ভাগশেষের মত পড়ে আছে। আড্ডা আলোচনার অতি উত্তম লগ্ন। শুদ্ধসত্ত্ব বড়ো সহজ সঞ্চালক নন। শুরুতেই প্রশ্ন কে কে লেখেন না? কী লিখি? কেন লিখি? লেখার ভাল মন্দ হয়? বুঝি? উত্তরে চায়ের পেয়ালা হাতে শুরু হল কথোপকথন। লেখকের বয়ঃসীমা আছে? লেখকের সংজ্ঞা কী? লিখলেই কি লেখক হওয়া যায়? চাই প্রচার। চাই প্রকাশ। বাণিজ্যিক সাফল্য না এলে কিসের লেখক? স্বীকৃতিই আসল? লেখার প্রসারটাই গুরুত্বপূর্ণ? তাহলে যে কোনো রাজনীতিক লেখক হতে পারতেন? তেমনটা তো হয় না?
লেখা ভালোমন্দ না ট্র্যাশ কিভাবে বিচার হয়? পাঠক কী চায়? পাবলিশার কী চায়? লেখক কী চায়? লেখা নিজে কী চায়? অবধারিতভাবেই উঠল সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গ। আমি যা লিখতে চাই তা কি লিখতে পারি? আমার বাড়ি আমার পরিবার কি তা মেনে নেবে? সমাজ কি সন্তানকে পেশাদার লেখক হিসাবে দেখতে চায় আদৌ? অকপট বিনোদ ঘোষাল এই আলোচনার মস্ত বড়ো প্রাপ্তি। তাঁর সাফ কথা। লেখক নিজের কাছে লেখার বিষয়ে সৎ না থাকলে লেখা বিপদে পড়ে। পীযূষ তুললেন আরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: পাঠকের পছন্দমত লিখে সাফল্য না লেখকের পছন্দসই লেখার পাঠক তৈরী - সাহিত্যের এখন কোনটা প্রয়োজন? লেখক কেমন করে লিখতে লিখতে পরিণত হয়? প্রকাশক তাতে কতটা ভূমিকা নেয়? পাঠকের চাহিদা কতটা নির্ভুলভাবে মাপা হয়েছে আজ অবধি? পাঠক নিজে জানে তার পছন্দ তার অবজ্ঞা তার ভালোবাসা তার উপেক্ষা সাহিত্যের কত ধারার জন্ম দিয়েছে আর কত ধারাকে ফল্গুর মত লেখকের মনের মধ্যে পুঁতে এসেছে? আমরা সাহিত্যকে কতটা ধারণ করতে পারলাম? এই আলোচনা চলতে থাকবে। যারা লেখে কেন লেখে যারা পড়ে কেন পড়ে। আগামী অধিবেশনে আরো ঘোরালো হয়ে উঠুক আলোচনা। বেআক্কেলে ঝড়ের অত্যাচারে যাঁরা মাঝরাস্তা থেকে ফিরে গেলেন, যাঁরা এসে উঠতে পারলেন না, পরবর্তী অনুষ্ঠানে আপনাদেরও আসা চাই কিন্তু।