লেখালিখি
এই ওয়েবসাইট-এর বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন প্রসঙ্গে আমরা জানিয়েছি, এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যে কোন লেখালেখি, সেটা কলকাতা কমন্স-এর বক্তব্য হোক বা কোন ব্যক্তি-র, সেটা, সেই বিষয়ে, একটা ধারণা তৈরি করার প্রক্রিয়ার অংশ। চূড়ান্ত কোন অবস্থান নয়, একটা বোঝাপড়ায় পৌঁছনোর চেষ্টা। এটা কলকাতা কমন্স-এর ঘোষিত অবস্থান।
কোন একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টায়, আরও অনেকেই, ব্যক্তিগত বা সাংগঠনিক অবস্থান থেকে, প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, লেখালেখি করছেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কের তাৎক্ষণিকতার কারণে, প্রয়োজনীয় লেখাগুলো প্রয়োজনীয় ভাবে সংরক্ষিত হয় না।
কোন বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত লেখাগুলো একজায়গায় রাখতে পারলে ভাল হয়, এই বিবেচনায়, 'লেখালেখি' - বলে এই অংশটি তৈরি হলো।এই লেখাগুলো আনকোরা নতুন হওয়ার কোন দাবি নেই। যেকোন জায়গায় প্রকাশিত লেখা গুরুত্ব বিবেচনায়, লেখক (বা যেখানে প্রযোজ্য, প্রকাশক)-এর অনুমতিক্রমে আমরা এই 'লেখালেখি' বিভাগে রাখতে চাই।
ফিকশন হলে, গপ্পগাছা। নন-ফিকশন হলে না-কাহিনী।
সেই নীলচোখো সায়েবদের জাহাজ ফের ঘাটে ভিড়েছে। পাক্কা তিন বছর পরে। তারা যে খরিদারি করবে, তাতে গাঁয়ের মধ্যে বেদম হুড়োহুড়ি লাগবে এ তো জানা কথা। কিন্তু তা বলে এক হাজার নকশী কাঁথার বায়না করবে এ খোয়াব কে দেখেছিল! নমুনাটা চিনতে ভুল হয় নি বাঁকার। উড়তে উড়তে খবরটা মেয়েকে দিতে এসেছে আগে।
মারী আঁতোয়ানেতের পোর্ট্রেট, “মসলিনে মারী”। শিল্পী - এলিসাবেথ-লুই ভিঝে লে ব্রাঁ ওরফে মাদাম লেব্রাঁ
এলিসাবেথ-লুই ভিঝে লে ব্রাঁ ওরফে মাদাম লেব্রাঁ ছিলেন তখনকার ফরাসী চিত্রশিল্পের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিখ্যাত ফরাসী পেন্টার ক্লদ-জোসেফ ভেরনের ছাত্রী ছিলেন, রোকোকো স্টাইলে প্রধানত আঁকতেন পোর্ট্রেট, মারী আঁতোয়ানেতের বেশ কিছু পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন, যার মধ্যে “মসলিনে মারী” অন্যতম বিখ্যাত।
ক্যালিকাট, অধুনা কোঝিকোড, থেকেই ক্যালিকো কথাটির উৎপত্তি। সেখানকার সূতা-কারিগরদের হাতে তৈরি ক্যালিকো যে কীভাবে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন জেলে পৌঁছয়, তার ইতিহাস আলাদা। ক্যালিকাটের সূক্ষ্ণ ক্যালিকো হয়ে ওঠে মেলবোর্ন কারাগারের কর্কশ হুড। এই ক্যালিকো হুড পরানো হত বিপজ্জনক আসামীদের, সলিটারি কনফাইন্মেন্ট যাদের বরাদ্দ, বাদবাকি আসামীদের সঙ্গে যাতে তারা কথা না বলতে পারে। ১৮৫৭ সালে তিন বছরের মাইকেল ক্রিমিন্সকে এই জেলে আটক করা হয়, ছাড়া হয় ছ’মাস বাদে। তার অপরাধ? সে কথা শুনত না, এবং কান্নাকাটি করে গোল বাঁধাত। ছোট্ট মাইকেলকে ক্যালিকো হুড পরানো হয়েছিল কিনা তা জানা যায় না, কিন্তু ভারতীয় কারিগরদের অপরূপ সৃষ্টি সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় বুকে যে এক কদাকার রূপ নিয়েছিল তা নিয়ে দ্বিমত নেই।
ভিভি-র রাজনীতিকে বাদ দিয়ে, 'কবি ও সমাজকর্মী' - এমন একটা গোল পরিচয়ের দাবি, যেটাতে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানকে ব্যাখ্যা করার দায় নিতে হয় না। ছবিসূত্র: সীতাংশু শেখর।
অনীকের সঙ্গে দেখা হলে, খুব কিছু কথা থাকে না ওর।সাহিত্য-সিনেমা-রাজনীতি-খেলা-প্রেম-গান ইত্যাদি কোন কিছু নিয়েই নয়। পরশু যখন নিজের থেকে একটানা প্রায় দুমিনিট কথা বলা হয়ে গেল, আমি তখন, ফোনের ভয়েস রেকর্ডার-টা অন করেছিলাম। রেকর্ডিং-টা এখান থেকেই শুরু, তাই এখান থেকেই দিলাম।
এই লেখাটা তৈরি হয়েছিল, ২০১৯-এর মে মাসের লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে। ২০২০-র অগাস্ট-এ আত্মনির্ভর ভারত তৈরির কথা হচ্ছে। এবং সেই লক্ষ্যে একটা ছিমছাম সরকার গড়ার চেষ্টায়, বাড়িত মেদ বিবেচনায়, হ্যান্ডলুম বোর্ড-এর মতন উপদেষ্টা সংস্থাগুলোকে তুলে দেওয়া হয়েছে। ২০১৯-এ এই লেখাটায় এরকম বেশ কিছু প্রচ্ছন্ন আশংকা প্রকাশ করা হয়েছিল। তাই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে, ২০২০-তে আবার সেটাকে ফিরে দেখা।
"এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না/এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না/এই বিস্তীর্ন শ্মশান আমার দেশ না/এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না..."(এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না / নবারুণ ভট্টাচার্য)
এটা নতুন করে বলে দেবার প্রয়োজন না হলেও, সারা বিশ্ব জুড়েই ভাষামৃত্যুর ক্রমবর্ধমান হার আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাষার প্রতি মানুষের দিনকে দিন বাড়তে থাকা অবিশ্বাস ও অমনোযোগের এই জমানায় এই কথাটা আমাদের সকলের পক্ষেই হয়তো মনে রাখা প্রাসঙ্গিক যে ভাষাই আমাদের একমাত্র আবাসন। মানুষ হিসেবে এই বিশ্বচরাচরের সঙ্গে আমাদের সার্থক কোনও যোগাযোগের প্রথম এবং প্রধানতম সেতু ভাষা। আমাদের সমষ্টিগত জীবন দাঁড়িয়েই আছে ভাষার ওপর ভর দিয়ে। ভাষা ছাড়া বাঁচতে চাওয়া অনেকটা অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে চাওয়ার মত। অতিশয়োক্তি মনে হতে পারে, কিন্তু তলিয়ে ভাবতে গেলে(আমরা ভাবিও কিন্তু ভাষাতেই!)