কলকাতা কমন্স

গপ্পগাছা

নকশী কাঁথা, ২০২০। ছবি সূত্র - DW Studiosনকশী কাঁথা, ২০২০। ছবি সূত্র - DW Studios

সেই নীলচোখো সায়েবদের জাহাজ ফের ঘাটে ভিড়েছে। পাক্কা তিন বছর পরে। তারা যে খরিদারি করবে, তাতে গাঁয়ের মধ্যে বেদম হুড়োহুড়ি লাগবে এ তো জানা কথা। কিন্তু তা বলে এক হাজার নকশী কাঁথার বায়না করবে এ খোয়াব কে দেখেছিল! নমুনাটা চিনতে ভুল হয় নি বাঁকার। উড়তে উড়তে খবরটা মেয়েকে দিতে এসেছে আগে।

মারী আঁতোয়ানেতের পোর্ট্রেট, “মসলিনে মারী”। শিল্পী - এলিসাবেথ-লুই ভিঝে লে ব্রাঁ ওরফে মাদাম লেব্রাঁ
মারী আঁতোয়ানেতের পোর্ট্রেট, “মসলিনে মারী”। শিল্পী - এলিসাবেথ-লুই ভিঝে লে ব্রাঁ ওরফে মাদাম লেব্রাঁ

এলিসাবেথ-লুই ভিঝে লে ব্রাঁ ওরফে মাদাম লেব্রাঁ ছিলেন তখনকার ফরাসী চিত্রশিল্পের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিখ্যাত ফরাসী পেন্টার ক্লদ-জোসেফ ভেরনের ছাত্রী ছিলেন, রোকোকো স্টাইলে প্রধানত আঁকতেন পোর্ট্রেট, মারী আঁতোয়ানেতের বেশ কিছু পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন, যার মধ্যে “মসলিনে মারী” অন্যতম বিখ্যাত।

ক্যালিকো হুড। ছবি সূত্র - উইকিমিডিয়া কমন্স, মেলবোর্ন।ক্যালিকো হুড। ছবি সূত্র - উইকিমিডিয়া কমন্স, মেলবোর্ন।

ক্যালিকাট, অধুনা কোঝিকোড, থেকেই ক্যালিকো কথাটির উৎপত্তি। সেখানকার সূতা-কারিগরদের হাতে তৈরি ক্যালিকো যে কীভাবে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন জেলে পৌঁছয়, তার ইতিহাস আলাদা। ক্যালিকাটের সূক্ষ্ণ ক্যালিকো হয়ে ওঠে মেলবোর্ন কারাগারের কর্কশ হুড। এই ক্যালিকো হুড পরানো হত বিপজ্জনক আসামীদের, সলিটারি কনফাইন্মেন্ট যাদের বরাদ্দ, বাদবাকি আসামীদের সঙ্গে যাতে তারা কথা না বলতে পারে। ১৮৫৭ সালে তিন বছরের মাইকেল ক্রিমিন্সকে এই জেলে আটক করা হয়, ছাড়া হয় ছ’মাস বাদে। তার অপরাধ? সে কথা শুনত না, এবং কান্নাকাটি করে গোল বাঁধাত। ছোট্ট মাইকেলকে ক্যালিকো হুড পরানো হয়েছিল কিনা তা জানা যায় না, কিন্তু ভারতীয় কারিগরদের অপরূপ সৃষ্টি সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় বুকে যে এক কদাকার রূপ নিয়েছিল তা নিয়ে দ্বিমত নেই।